মেডিকেল কলেজের অনেক জুনিয়র আছেন যারা ফার্স্ট ইয়ার-সেকেন্ড ইয়ারে থাকতে জিজ্ঞাসা করেন, যে এফসিপিএস /এমআরসিপি/ OET/IELTS/PLAB ইত্যাদির জন্যে এখন থেকে কী করা যেতে পারে যাতে করে এক চান্সেই পাশ হয়ে যায়।
এইরকম চিন্তা মেডিকেল কলেজে ঢুকার পর অনেকেই করেন।
কিন্তু সংগদোষ, পর্যাপ্ত মোটিভেশনের অভাব, পার্টনারের অভাব- এইসব টুকটাক কারণে একটা সময়ে যেয়ে আর এই আগ্রহ থাকেনা।
বিশ্বাস করেন, সময়ের কাজ সময়ে করার চেয়ে ভাল আর কিছুই হইতে পারেনা।
যেমনঃ আপনি ফার্স্ট ইয়ারে আছেন। It is good to know about IELTS. But there is literally no point in practicing IELTS material now.
বরং আপনার এমন কিছু করা উচিত যাতে করে, যখন সময় আসবে, তখন যেন আপনার স্কিল নিয়ে টানাটানি না পড়ে। আপনি থার্ড ইয়ারে আছেন, PLAB এর পড়া আপনার এখন পড়ার দরকার নাই। বরং থার্ড ইয়ারের পড়াটা ভালোভাবে পড়েন, যাতে করে PLAB এর বই পড়ার সময় হইলে আপনার আর ফার্মা, প্যাথো আর মাইক্রোর পেছনে ফালতু সময় নষ্ট করা না লাগে।
সময়ের কাজ সময়ে করার চেয়ে ভাল আর কিছুই হইতে পারেনা।
এখন থেকে যা যা করতে পারেনঃ
• Anatomy Datta পড়বেন। অনেকে Devs Anatomy পড়েন, অনেকে BD Chaurasia পড়েন, কোন সমস্যা নাই। বইটা রেখে দিবেন। অতি ভালোবেসে জুনিয়রকে দিবেন না। ম্যাক্সিমাম জুনিয়র বইয়ের জন্যে বাসা থেকে টাকা নেয়। আপনি বই না দিলে ছোট ভাইটা পড়তে পারবেনা -এমনটা ভাববেন না। আর আরেকজনের দাগানো বই দেখে পড়ার কিছু নেই। এইটা ফালতু ট্রেন্ড। যে আরেকজনের দাগানো বই পড়ে, তার পড়াশুনা না করা ভালো।
আপনি আইলসা হইলে সিনিয়রের বই দেখে নিজের বই দাগাবেন, সিনিয়রের বই এর কোনায় লেখা নোট নিজের বই এ লিখে নিবেন। কিন্তু অন্যের বই পড়বেন না।
• Physiology: যারা Guyton পড়তে চান তারা পড়বেন, যারা Vision পড়তে চান Vision পড়েন। বই দাগায়ে পড়বেন, এবং জুনিয়র কাউকে দিবেন না। Ganong কী লাগবে? – জ্বি লাগবে। ফার্স্ট ইয়ারে যেই গ্যানন পড়লে আপনাকে আঁতেল বলতো যেসব মানুষেরা, সেসব সিনিয়ররাই আপনাকে ছয় বছর পর বলবে গ্যানন থেকে ফিজিওটা পড়িস।
• Biochemistry
অন্তত ABC পড়ে ফেলেন পুরাটা। ভালোভাবে, দাগিয়ে।
বিশ্বাস করেন, ফার্স্ট ইয়ারে স্যার যখন পড়াচ্ছিলেন ইউরিন কিভাবে acidification হয়, আমি ভাবছিলাম এ জেনে আমার কি হবে। ফিফথ ইয়ারে এসে Renal Tubular Acidosis ভালোভাবে বুঝার জন্যে আমার সত্যিই আবার ABC Biochemistry বইটা খুলে দেখা লাগছিল।
চাইলে Harper/Lippincott পড়তে পারেন।
• Microbiology:
Lange Review টা এমবিবিএস এ পড়া শেষ করবেন।
এর পাশাপাশিঃ
Dr Najeeb এর Immunology + Microbiology lecture, Microbiology Made Riddiculasly Simple এগুলা পড়বেন। নাজীব এর লেকচার নাই। কী করবো? – কিনেন। টাকা দিয়ে। পাত্তি খরচ করেন। পেনড্রাইভে নিবেন না। কেউ ফ্রী চিকিতসা চাইলে মাইন্ড করেন, কিন্তু ফ্রীতে পড়তে চান কেন?
• Pharmacology. নিজের কেউ যখন অসুস্থ হবে, তখন বুঝবেন যে এই বংগদেশের ফার্মেসীওয়ালা থেকে প্রফেসর – মোটাদাগে সবাই আন্দাজে, পছন্দমত এন্টিবায়োটিক দেন।
lippincott বইটা পড়েন ভাই।
Sketchy Pharmacology পড়তে পারেন।
CMS Handbook of Antibiotic বইটাও পড়বেন। তবে এইটা ইন্টার্নিতে যেয়ে পড়া রিকমেন্ড করি। আগে আগে পড়লে বুঝবেন না।
স্যারের ক্লাস লেকচার পড়ে আনন্দে লাফায়েন না। Statin এর সাথে Macrolide গ্রুপের কোন এন্টিবায়োটিক দেয়া যায়না, Amoxicillin-Clavuronic Acid খেতে হবে খালি পেটে। Moxifloxacin খুবই শক্তিশালী এন্টিবায়োটিক, কিন্তু UTI তে কোন কাজই করেনা – জানতেন আগে ? এগুলা স্যারের পড়ায়না, পড়াবেন ও না। বই পড়তে হবে, পড়ে শিখতে হবে।
• Pathology
Pathoma Videos
Dr Najeeb Videos
Kaplan USMLE Videos
এই তিনটার কোনটা বাদ দিয়েন না। সব দেখে শেষ করেন। নোট করবেন।
Robbins পড়বেন দাগিয়ে। অন্তত General Pathology পার্ট টা। Hematology ভাল না পারলে জীবনেও মেডিসিনের হেমাটোলোজি বুঝবেন না। Pathoma থেকে দেখে ফেলেন পুরা হেমাটো। পরে আমাকে কাচ্চি খাওয়াইয়েন।
যেসব চ্যানেল এর ভিডিও দেখতে পারেনঃ
- Osmosis
- Road To UK
- Dr Najeeb Lectures
- Stanford Medicine 25
- Shain Ul Islam
- Geeky Medics
- Dr Dilruba Zebas Obs and Gynae Lectures
- Dr Ataullahs Tutorial
- Amins Creativity
- CallosumBD
- Dr Chandona’s Easiest Anatomy Classes
- Platform Academia
- Prof Dr Md Shamsuzzaman
- Axis Medical School
- Genesis Online University
- White Coat Gallery
- Strong Medicine
- Medicolis Perfectionalis
- Medmastery
- Zero to Finals
- Dr Sanjoy Roy
- Doctorola TV
- P2A
- Dr Tasnim Jara
- Dr Shariful Halim
- BD Physicians
- 4 Minutes Clinical
- Medibee
- Ninja Nerd Lectures
- MedNerd – Waqas Fazal
- Rhesus Medicine
ইউটইউব খুঁজে চ্যানেলগুলা বের করেন। সব রেডিমেড খোজার অভ্যাস ভালোনা। আপাতত আর কোন নাম মনে পড়তেছেনা।
কিছু বিশ্বসেরা ওয়েবসাইটঃ
- faisalization.wordpress.com জ্বি, আমার ব্লগকে আমি বিশ্বসেরা মনে করি।
- google.com সবকিছু আঁতেল বন্ধুকে বা সিনিয়রকে জিজ্ঞেস না করে মাঝেমধ্যে গুগল সার্চ দেন।
- youtube.com
- wikipedia.org
- radiologymasterclass.co.uk
- Radiopaedia.org
- Dermnetnz.org
- litfl.com
- medscape.com
- https://www.bonetalks.com/
- en.bookfi.org
- pdfdrive.net
- medbook4u.com
- Libgen.me
- b-ok.cc
- https://passmedicine.com: খুব তো তেল অনেকের, ভাইয়া এখন থেকে কিভাবে পড়লে এক চান্সে এইটাতে চান্স পাওয়া যাবে? – ফিফথ ইয়ারে পড়ার সময় পারলে ডেভিডসন পুরাটা পড়ে শেষ করেন, এরপর passmedicine solve করে দেখান পুরাটা। You’re welcome.
আমি কম্পিউটার চালাইতে পারিনা – এইটা যে বলে সে গর্দভ। মেডিকেল কলেজে থার্ড ইয়ারে পড়েন আপনি। আপনাকে “বাসা থেকে কম্পিউটার কিনে দেয়নি” – এজন্যে আপনার ল্যাপটপ নেই। এইটা ভুয়া এক্সকিউজ। আপনার সাথের অনেকেই টিউশনি করে ফ্যামিলি চালায়। ২/৩ মাস টিউশনি করলে ল্যাপটপ কিনার টাকা হয়ে যায়।
“আমি টিউশনি করতে পারিনা”
গর্বের বিষয় না। আপনি যে বলদ এইটা তার প্রমাণ।
“আমাকে টিউশনি দেয়না কেউ।”
আপনি যে গর্দভ এইটা তার আরেকটা প্রমাণ। কেন আপনাকে টিউশনি দিবেনা? নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে। Work on that. নিজেকে ইম্প্রুভ করেন। নিশ্চয়ই টিউশনি পাবেন।
“টিউশনি করলে পড়াশুনার ক্ষতি হয়।”
আপনি কি প্রফে প্লেস করেন? নাকি অনার্স পান? কোনটাই না। কারণ অমন হইলে আপনি আমার পোস্ট পড়তেন না। আমি ফাইনাল প্রফে একবার ফেল করা মাল।
দুই-তিনটা টিউশনি করলে পড়াশোনার ক্ষতি হয়না ধরে নিয়ে টিউশনি শুরু করেন।
“কম্পিউটারটা শেখা হয়নাই।”
“দোকানে যেয়ে করে ফেলবো।”
“অমুককে দিয়ে করায় ফেলব।“
“দোস্ত আমার প্রেজেন্টেশন টা বানায়ে দে।“
ভাই প্লিজ। মানুষজনরে ফালতু প্যারা দেওয়া বন্ধ করেন। নিজের কাজ নিজে করেন।
Microsoft Word, Powerpoint এর কাজ অবশ্যই শিখবেন।পারলে Excelও শিখবেন। ওয়ার্ডে সিভি বানানো শিখবেন। প্রেজেন্টেশন বানানো শিখবেন। ইন্টার্নির পর দোকানে যেয়ে সিভি বানাবেন না। বন্ধুকে রিকুয়েস্ট করবেন না আমারে একটা প্রেজেন্টেশন বানায়ে দে।
Google Drive ব্যবহার করা শিখবেন। ১০০ জনের মধ্যে ৭০ জন ডাক্তার গুগল ড্রাইভ এর লিংক থেকে ফাইল ডাউনলোড করতে পারেনা। এটা খুব একটা গর্বের কথা না।
পোলাপান ইন্টার্নি শেষ করে ফেলে ইসিজি দেখে MI বুঝেনা। লজ্জার ব্যাপার।
ইসিজি, চেস্ট এক্সরে আর স্কাল এর সিটি স্ক্যান না বুঝতে পারার মধ্যে আদতে কোন গর্ব বা বিলাসিতা নেই। প্রতিদিন হাজার হাজার ইসিজির ক্লাস হয়। Axis Medical School, Genesis Online, ECG Club, Grey Matter, SOMA, White coat Gallery, Dr Sayed Sujon, Dr Sayedur Rahman সহ আরো অনেকেই ইসিজি পড়ান। আমিও পড়াই। একটা কোর্সে ঢুকেন। শিখেন। প্র্যাকটিস করেন। চেস্ট এক্সরে এর বেসিক শিখেন। Hemorrhagic আর Ischemic Stroke স্ট্রোক বুঝতে শিখেন। আপনার বাবা একদিন স্ট্রোক করবেন হয়তো, তখন কেন্দে কুল পাবেন না। Subarachnoid Hemorrhage ও বুঝা কঠিন না। চেষ্টা করলেই পারবেন।
Lung Sound বুঝেনা এমন অনেকে আছে। এটার পেছনে স্যারদের অন্যতম অবদান। স্যারদের অনেকেই পোলাপানদেরকে বলেন, পরীক্ষায় ফাইন্ডিং বুঝা লাগবেনা। Procedure হইলেই হবে। কথা সত্য। পরীক্ষার পাশের জন্যে ফাইন্ডিং হয়তো লাগবেনা। কিন্তু বাস্তবে Findings লাগবে। দিনশেষে Finding ই ম্যাটার করে। পালস মাপার সব আপনি যদি Semiprone-semiflexed position এ হাত না ধরেন, কিছুই হবেনা। কিন্তু যদি একটা irregularly irregular pulse আপনি বুঝতে না পারেন, এটা আপনার জন্যে চরম ব্যর্থতা। এর জন্যে কার্ডিওলোজিস্ট হওয়া লাগবেনা। থার্ড ইয়ারের যেকোন স্টুডেন্টই বুঝবে, যদি সে বুঝতে চায়।
কোচিং নিয়ে কত তামাশা।
“কেন ইসিজি ওয়ার্কশপ করে শিখা লাগবে।”
“কেন ডেভিডসন ব্যাচে ভর্তি হইতে হবে”
“কেন উনি ব্যবসা করে”
“বেইলি লাভ ব্যাচ হারাম”
“জিপি ওয়ার্কশপ একটা ধান্দাবাজি“
ভাই, এইসব আলোচনা মহাজ্ঞানী সুশীলদের জন্যে। আপনি মহাজ্ঞানী না। এই আলোচনায় বসার যোগ্যতা আপনার থাকলে আমার পোস্ট আপনার চোখে পড়তো না।
আপনার যদি মনে হয় যে অমুকের কাছে পড়লে আপনার পড়তে সহজ হবে- পড়েন। আপনার যদি মনে হয় এইটা শিখার জন্যে অমুক ব্যাচে ভর্তি হওয়া দরকার – হয়ে যান।
কোভিড প্যান্ডেমিক শুরু হওয়ার পর থেকে সব ক্লাস হয় Zoom App এ। কিছু গাধার বাচ্চা আছে Zoom চালাইতে পারেনা। শিখেন ভাই। শিখার বয়স নাই। না শিখলে পদে পদে লাত্থিগুতা খাইতে হবে।
ইংরেজি সিরিজ দেখেন। সিনেমা দেখেন। বই পড়েন। IELTS দিতে যেয়ে দেখলেন যে আপনি ইংরেজদের কথা কিছুই বুঝেন না। OET Reading সেকশনে আপনার খুবই কষ্ট হয় উত্তর খুঁজে বের করতে। কারণ হচ্ছে আপনি ইংরেজি সিনেমা, ইংরেজি সিরিজ দেখেননি। টেক্সটবই বুঝে পড়ার চেষ্টা করেননি। করলে এই সমস্যা হতোনা।
ভাল স্কুলে পড়িনাই, আমার বাসায় এইটা ছিলোনা, অইটা ছিলোনা– এগুলা লেইম এক্সকিউজ। পারেন না, পড়েননাই এইটা আপনার সমস্যা। আপনার সীমাবদ্ধতা। Work on that.
অতএব, সিনেমা দেখেন। সিরিজ দেখেন। পড়েন।
Start Working on your CV. যদি মনে করেন যে ইন্টার্নির পর পাড়ার দোকানে যাইয়া সিভি বানায়ে ফেলাবেন আর ওই সিভি দেইখা আপনাকে চাকরী দেওয়ার জন্যে হুড়োহুড়ি পইরা যাবে, তাইলে আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন। CV বানানো একটা কন্টিনিওয়াস প্রসেস। একদিনে হবেনা। বানাবেন, নিয়মিত আপডেট করবেন। এক্সপার্টদেরকে দেখাবেন। এভাবে আস্তে আস্তে আপনার সিভি ভাল হবে। ওমুক বড়ভাই এর সিভি দেইখা বানায়ে ফেলবো- এমনটা ভাবলে আপনার সিভি কোনদিন ভাল হবেনা, কারণ আপনি কোন দিন শিখতে পারবেন না কিভাবে বড়ভাই এর সিভিটা দেখে সেইটা নিজের সিভিতে ইম্পলিমেন্ট করতে হবে।
Tags:
ভাইয়া, আমার কাছে এটা আসলেই বিশ্বসেরা একটা ব্লগ।
থ্যাংকস ভাইয়া। আপনার লেখা দেখেই আমি মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার ভরসা পেয়েছিলাম।
You’re so kind brother !
Apnar postgulo atodin dekhini keno eitar jonno afsos hosse 😑
You can always start from the scratch.
Pingback: মেডিকেল স্টুডেন্টদের জন্যে কিছু অপ্রিয় সত্য কথা — FAISALIZATION – Iffatized
jazakallah khair
Vaiya i want to start for UKMlA
Now preparing for OET gives suggestions for UKMlA
Tnx in advance
যদিও লেখাগুলো পড়ে আমি বাস্তবতার উত্তর পেয়েছি।
আমি সরকারী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেলের কলেজএর স্টুডেন্ট
আমাদের নিয়ে কিছু লিখেন প্লিজ।
মানুষ কেনো বা আমরাই বা কেনো নিজেদের ছোট করে দেখি?
Impressed