পরীক্ষা কেমনে হয়ঃ
পরীক্ষা কিভাবে হয় সেইটা বুঝাটা জরুরি। মেডিসিন পরীক্ষার ভাগগুলো হলোঃ
১। রিটেন। দুইটা পেপার- ফার্স্ট পেপারে ইন্টারন্যাল মেডিসিন সবটা (কার্ডিওলোজি, রেস্পিরেটরি, জি আইটি, হেপাটোবিলিয়ারি, এন্ডোক্রাইন ); নেফ্রোলোজি, নিউরোলোজি আর ইনফেকশাস ডিজিজ বাদ দিয়ে। সেকেন্ড পেপারে পেডিয়াট্রিক্স, নিউরোলোজি, নেফ্রোলোজি, স্কিন, সাইকিয়াট্রি।
২। অস্পি। দশটা স্টেশন থাকে। এক্সরে, ইসিজি, প্রেসক্রিপশন, Instrument আর বাকিগুলো নরমাল প্রশ্নের উত্তর।
৩। ভাইভা। তিনটা ভাইভা বোর্ড। দুইটা ইন্টারন্যাল মেডিসিন এর, একটা পেডিয়াট্রিক্স এর বোর্ড। প্রতি বোর্ডে একজন করে ইন্টার্নাল, আর একজন করে এক্সটার্নাল বসেন। মেডিসিনের দুই বোর্ডের কোন বোর্ডে কোন টপিক থাকবে এটা ফিক্সড করা থাকে আগে থেকে, কিন্তু স্যারেরা ফলো করেন না তেমন। প্রত্যেকটা বোর্ডেই এক্সরে, ইসিজি, Instrument থাকে।
৪। লং কেস। একটা লং কেস থাকে।
৫। শর্ট কেস। ৫টা শর্ট কেস করতে হয়। তিনটা মেডিসিনের, দুইটা পেডিয়াট্রিক্স এর।
কি কি পড়বাঃ
১। ডেভিডসন
২। আবদুল্লাহ স্যার এর লং কেস
৩। আবদুল্লাহ স্যার এর শর্ট কেস
৪। আবদুল্লাহ স্যার এর এক্সরে
৫। আবদুল্লাহ স্যার এর ইসিজি/ The ECG Made Easy by John R Hampton
৬। Pre Exam viva for Medicine by Dr HN Sarker , এটার বদলে ময়মনসিংহ মেডিকেলের শ্যামল স্যারের শিট পড়তে পারো, অনেকে পড়ে এটা। তবে আমি HN Sarker স্যারের বইটাই পড়েছি।
৭। গাইড- আমি তেমন একটা পড়িনাই। তবে সবাই বলে নিউরন ফার্স্ট পেপার আর এন্ডেভার সেকেন্ড পেপার কিনতে। আমিও তাই কিনেছিলাম।
৮। আরিফ অসপি গাইড
আমি ক্যাম্নে কী পড়েছিলামঃ
কী কী পরা উচিত সেটা না বলে বরং আমি কি কি পড়ছিলাম সেইটা আগে বলিঃ
১। নিউরোলোজি, নেফ্রোলোজি, জিআইটি এই তিনটা সিস্টেম পুরাপুরি লেকচার পড়েছি। প্রত্যেক সিস্টেম এর কমন ডিজিজ গুলো ডেভিডসন থেকে পড়েছি।সেই সাথে কার্ডিওলোজির কিছু অংশ ডাঃ নাজীব এর ভিডিও দেখেছিলাম।
২। রেস্পিরেটরি- রাতুল দাদার শিট + ডেভিডসন + আবদুল্লাহ স্যার এর লং কেস
৩। এন্ডোক্রাইন- আবদুল্লাহ স্যার এর শর্ট কেস এর বই
৪। মাসকুলোস্কেলেটাল – নিউরন গাইড + অসমোসিস এর ভিডিও
৫। ইনফেকশাস ডিজিজ – এন্ডেভার গাইড + মাইক্রোবায়োলোজি লেকচার + মাইক্রোবায়োলোজি গাইড
৬। স্কিন – রাতুল দাদার শিট
৭। সাইকিয়াট্রি – রাতুল দাদার শিট
৮। পেডিয়াট্রিক্স- আবিদ মোল্লাহ স্যারের বই পুরাটা + ক্লাস লেকচার।
ক্যাম্নে পড়া উচিতঃ
আমি যেগুলা পড়েছি বলেছি সেগুলার সাথে নিচের জিনিসগুলা যোগ হবে ঃ
রিটেন-ভাইভাঃ
১। ডেভিডসন পড়া উচিত। অন্তত যারা মেডিসিনে ক্যারিয়ার করতে চাও তারা অবশ্যই ডেভিডসন পড়বা। সব না পড়লেও অন্তত কমন ডিজিজগুলা পড়বা।
২। লং কেস যেগুলো দেয় পরীক্ষায়, সে টপিকগুলো অবশ্যই আবদুল্লাহ স্যার এর লং কেস এর বই থেকে পড়ে ফেলবা। আবদুল্লাহ স্যারর বইয়ে যে সিরিয়ালে প্রশ্ন গুলা দেওয়া আছে, প্রফে স্যারেরা ঠিক অইভাবেই প্রশ্ন ধরেন।
৩। প্রতিটা সিস্টেম পড়া শেষ করে HN Sarker স্যার এর বই থেকে ওই সিস্টেমের ভাইভার কোশ্চেন গুলা একবার পড়ে ফেলবা। যেগুলা আগের পড়া সেগুলা আর এখান থেকে পড়ার দরকার নাই।যেগুলা নতুন সেগুলা হাইলাইটার দিয়ে মার্ক করে রাখবা, যেন পরেরবার শুধু এগুলা রিভিশন দিতে পারো।
৪। ফিফথ ইয়ারে যখন ওয়ার্ড চলবে তখন এক্সরে, ইসিজি, Instrument, লং কেস-এই চারটা জিনিস পড়ে ফেলবা।প্রথমে এক্সরে ইসিজির বেসিক জিনিসগুলো পড়ো। এক্সরে-ইসিজি দুইটার জন্যেই আবদুল্লাহ স্যারের বই পড়েছি আমি। ইসিজির জন্যে অনেকে John R Hampton এর The ECG Made Easy বইটার কথা বলে , ওইটাও পড়তে পারো। আমি শুনেছি এই বইটা সহজ আবদুল্লাহ স্যারের টার তুলনায়। বেসিক পার্টটুকু পড়া হলে কলেজের এক্সরে ইসিজি, যেগুলা প্রফে থাকে সেগুলো পড়ে ফেল। এই জিনিসগুলা এমনভাবে পড়ে ফেলবা যাতে করে প্রফের আগে এগুলা নিয়ে চিন্তা করতে না হয়। প্রফের ভাইভা শুরু হয় এক্সরে ইসিজি Instrument দিয়ে, প্রথমে ভাল একটা ইম্প্রেশন দিতে পারলে পাশ করা সহজ হয়।
বেসিক ইসিজি কিভাবে পড়বা সেটা জানতে এই পোস্টটা পড়ো।
শর্ট কেসঃ
এক্সামিনেশন করা শিখে ফেলবা সব সিস্টেম, কোনটা বাদ দিবা না। ওয়ার্ডে স্যারদের কাছ থেকে দেখো, ইউটিউবে ম্যাকলয়েডের ভিডিও দেখো। আবদুল্লাহ স্যারের শর্ট কেস বই থেকে শর্ট কেস রিলেটেড কোশ্চেন গুলা পড়ে ফেলবা।
পেডিয়াট্রিক্স এর স্যারদের কাছ থেকে আলাদা করে শর্ট কেস দেইখো, অনেক স্যার অন্যরকম ভাবে এক্সামিনেশন করান।
অসপিঃ
আলাদা করে এখন কিছু পড়া লাগবেনা। এক্সরে, ইসিজি, Instrument পড়লেই অসপির পড়া ৭০% হয়ে যাবে। বাকিটা ব্লকের সময় অসপি গাইড থেকে পড়লে হবে।
সবশেষে একটা ফাইনাল কথা বলি। তুমি যদি অলস হও, অত পড়াশুনা করতে ভালো লাগেনা , তাইলে-
মেডিসিন এর রিটেন-ভাইভার জন্যে লেকচার/ডেভিডসন/গাইড যেইটা খুশি পড়ো। এর সাথে লং কেসগুলা আবদুল্লাহ স্যার এর বই থেকে পড়ে ফেলো, অল্প কয়টা ডিজিজ মাত্র।প্রতিটা সিস্টেম পড়া শেষ হলে HN Sarker স্যারের বইটা পড়বা। এক্সরে ইসিজি Instrument ভালো করে পড়বা, এইটাতে ফাঁকি দেওয়া যাবেনা। পেডিয়াট্রিক্স এর জন্যে আবিদ মোল্লা স্যার এর বই পড়বা। আর এক্সামিনেশন করা শিখে ফেলবা, এটাতে যেন কোন ভুল না হয়।
এই গুগল ড্রাইভ লিংকে ফাইনাল প্রফের জন্যে বেশ কিছু স্টাডি ম্যাটেরিয়াল দেওয়া আছে। এখানে ফরিদপুর মেডিকেল এর এক্সরে, ইসিজি, Instrument সব দেওয়া আছে। ডাউনলোড করে রাখতে পারো।
Tags:
Thanks a lot…. This is very much helpful to guide a mischief soul in the ocean of medicine
Most Welcome Apu. Best wishes!