ইসিজি অনেক বড় একটা টপিক। শুরুর দিকে বুঝা যায়না যে এত বিশাল কি আছে এটার মধ্যে, কিন্তু আপনি যত পড়বেন তত আস্তে আস্তে বুঝবেন এটা কত ভাস্ট। এই পোস্টে আমি ইসিজির একদমই বেসিক জিনিসপত্রগুলো কিভাবে শিখবেন সেটা নিয়ে আলোচনা করবো।
আপনি এই পোস্ট পড়লে ইসিজি সম্পর্কে কিছুই জানতে পারবেন না আসলে। বরং কী করলে ইসিজি সম্পর্কে জানতে পারবেন, সেটা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেন।
প্রথম কথা হচ্ছে, বেসিক ইসিজি একদিনে শেখার বিষয় না। পরীক্ষার জন্যে পড়া এক জিনিস, আর শেখা আলাদা জিনিস।বেসিক ইসিজি শিখতে আপনার সপ্তাহখানেক এর মতন সময় লাগবে। প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট করে সময় দিয়ে এক থেকে দুই সপ্তাহ নিয়মিত প্র্যাকটিস করলে আপনি মোটামোটি ভাবে বেসিক জিনিসপত্রগুলো শিখতে পারবেন, এবং Common Disease গুলো ডায়াগনোসিস করতে পারবেন আশা করা যায়।
আমি নিজে ইসিজি পড়েছি যেভাবে + পড়ার পরে অনেক কিছু বুঝতে পেরেছি যে এভাবে পড়লে হয়তো আরো ভালো হতো- এই দুই এর কম্বিনেশন নিয়ে আজকের এই পোস্ট।
শর্টকাটে শেখার জন্যে এই পোস্ট না। কম সময়ে কিভাবে শিখবেন সেটার জন্যে আরেকদিন আরেকটা পোস্ট লিখবো।
যা যা লাগবেঃ
১। Guyton / Ganong / CCC / Blueprint গাইড / Endeavour গাইড/ Vision- যেখান থেকে আপনি ফার্স্ট ইয়ারে CVS পড়েছিলেন।
২। ডাঃ নাজীব এর লেকচার। ইউটিউবে পাবেন, বা টরেন্ট থেকে ডাউনলোড করেন। অথবা টাকা দিয়ে সাবস্ক্রিপশন কিনেন। অথবা যার কাছে আছে তার কাছ থেকে হার্ড ড্রাইভে করে নিয়ে যান।
৩। ডাঃ এ বি এম আবদুল্লাহ স্যারের ইসিজি বই
৪। John Hampton এর ইসিজি বই [ Hampton এর তিনটা ইসিজি বই আছে। একটা বড়, ডিটেইলড – এটা পড়তে না চাইলে সমস্যা নাই। ছোট একটা বই আছে, The ECG Made Easy, ওইটা পড়বেন। আর আরেকটা বই হচ্ছে ১০০ ইসিজি প্র্যাকটিস করার জন্যে। এটা কিনতে পারেন চাইলে।
কিভাবে পড়বেনঃ
Step 1:
ফার্স্ট প্রফের ফিজিওলোজি বই বা গাইডটা টা একবার খুলেন। খুলে নিচের এই তিনটা টপিক একবার রিডিং দেনঃ
- ECG
- Cardiac Action Potential
- Conduction system of Heart
মুখস্ত করা লাগবেনা, বা মনে রাখা লাগবেনা। জাস্ট চোখ বুলাইলেই হবে। পুরান বই খুঁজে না পেলে জুনিয়র কারো বই দেখে পড়েন। প্যারা নিয়েন না, not a big deal.
Step 2:
ডাঃ নাজীব এর ইসিজি এর উপর ভিডিওগুলো দেখে ফেলেন।
ডাঃ নাজীব এর ইসিজি নিয়ে অনেকগুলা ভিডিও আছে। আমার কাছে প্রথম ৪টা ভিডিও ছিল শুধু, আমি ওই চারটা ভিডিওই দেখেছিলাম। আপনারা চাইলে পুরোটা দেখে ফেলতে পারেন। অথবা শুরুতে প্রথম চারটা ভিডিও দেখতে পারেন, বাকিগুলো বই টই পড়ার পরে দেখলেন। কোনটাতেই সমস্যা নেই। ডাঃ নাজীব এর ভিডিও অনেক বড়, এক কথা স্যার বারবার বলেন, অনেক স্লোলি পড়ান, এজন্যে বিরক্ত লাগতে পারে। সেজন্যে 1.5x বা 1.75x বা 2x স্পিড দিয়ে ভিডিও দেখবেন।
আমি সবাইকে রিকমেন্ড করি ডাঃ নাজীব এর ভিডিও লিখে রাখার জন্যে। যদি সেটা করতে পারেন তাহলে খুবই ভালো। তবে ইসিজির জন্যে লিখে রাখাটা ম্যান্ডাটরি না।
Step 3:
এবার একটা বই নেন। আবদুল্লাহ স্যারের বই পড়তে পারেন, বা Hampton এর বই পড়তে পারেন। আমি আবদুল্লাহ স্যারের বই দেখে পড়েছি। তাই আমি এটা নিয়েই বলছিঃ
Day 1:
আবদুল্লাহ স্যারের বই এর পৃষ্ঠা নাম্ভার ১ থেকে ৮ পর্যন্ত পড়বেন।
তার মধ্যে ১ থেকে ৬ পৃষ্ঠা সবারই আগের পড়া, এইটুকু শুধু চোখ বুলাবেন একবার, সব আগেই বুঝছেন এখন আর বুঝা লাগবেনা কিছু, মনেও রাখা লাগবেনা।
৭ আর ৮ নাম্বার পৃষ্ঠা বুঝে পড়বেন, মনে রাখার চেষ্টা করবেন। দুই তিনবার পড়বেন। কিন্তু মুখস্ত করতে যাবেন না। যখনই মনে হবে যে ভুলে গেছেন, তখনই একবার চোখ বুলায়ে নিবেন। এবার এই লিংকে যেয়ে এই পৃষ্ঠাটা পড়ে আসেন। শুধু এই একটা পৃষ্ঠাই পড়বেন, এখান থেকে অন্য লিংকে যাওয়ার দরকার নাই। আজকের পড়া এইটুকুই।
Day 2:
আজকে নরমাল ইসিজি দেখতে কিরকম, এবং তার বিভিন্ন পার্ট সম্পর্কে পড়বো।
আগের দিন ৮ নাম্বার পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়েছেন।
আজকে আমরা ১০ থেকে ১৩ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়বো।
৯ নাম্বার পৃষ্ঠা এখন পড়ার দরকার নাই।
১০ নাম্বার পৃষ্ঠার Brief discussion about ECG Paper এই পার্ট টা পড়েন।
১১ নাম্বার পৃষ্ঠার ECG Conventions and Intervals এই বক্স টা পড়েন।
১২ নাম্বার পৃষ্ঠা থেকে Nornal ECG Tracing এর ছবিটা দেখেন। এর উপরের লেখাগুলা লাগবেনা। এরপর Types of Waves in ECG, Other Waves
১৩ নাম্বার পৃষ্ঠা থেকে Intervals in ECG, ECG showing different intervals এই টুক পড়েন।
আশা করি এইটুকু পড়ার পরে আপনি একটা ইসিজি পেপার হাতে নিলে এখন আর হিজিবিজি হিজিবিজি মনে হবেনা।আপনি বুঝবেন কোনটা কোন Lead, কোন Lead কি indicate করে।
Day 3:
আজকে আমরা শিখবো কিভাবে ইসিজি পেপার দেখে Rhythm বুঝা যায়। পৃষ্ঠা নাম্বার ২৫ এ চলে যান। Rhythm of Heart এই হেডিং এর ভিতরের লেখাটা পড়েন।Causes এর আগ পর্যন্ত। এবার এই ভিডিওটা দেখে আসেনঃ
এবার Causes of Irregular Rhythm এই পয়েন্ট টা রিডিং দেন। এগুলো মুখস্ত করা লাগবেনা। বারবার দেখতে দেখতে এমনিতেই মনে থাকবে।
এবার আপনি পৃষ্ঠা নাম্বার ১১৫ তে যান। এখানে প্র্যাকটিস করার জন্যে ১০০ ইসিজি দেওয়া আছে। এখান থেকে প্রথম ২০ টা ইসিজি আপনি দেখবেন। একটা খাতা-কলম নিয়ে বসেন। প্রত্যেকটা ইসিজি থেকে শুধু রিদমটা দেখবেন, এবং লিখে রাখবেন খাতায়। ২০টা করা শেষ হলে মিলায়ে দেখবেন, উত্তর বইয়ের শেষে দেওয়া আছে। যেগুলাতে R wave বা QRS Complex কোনটা সেটা বুঝতে পারবেন না সেগুলো স্কিপ করে যান, এগুলো পরে বুঝতে পারবেন। যেগুলো ভুল হয়েছে সেগুলো বইয়ে মার্ক করে রাখেন।
Day 4:
আজকে আমরা Rate Calculation শিখবো।
পৃষ্ঠা নাম্বার ২৬ থেকে Calculation of Rate টা পড়ে ফেলেন। পড়া শেষ হলে বই এর শেষে যে প্র্যাকটিস সেশনে যান। গতদিন আবার ১ থেকে শুরু করেন। আজকে ২৫ পর্যন্ত যাবেন। খেয়াল রাখবেন গতদিন Rhythm করার সময় যেগুলো ভুল করেছিলেন সেগুলো যেন আজকে আর ভুল না হয়।
এখানে একটা জিনিস মনে রাখবেন Heart Rate কত এইটা সাধারণত আমাদের হিসাব করতে হয়না। আমরা দেখি যে Bradycardia বা Tachycardia আছে কিনা। ওইটুক হিসাব করতে পারলেই হবে।
[ Rate নিয়ে আমি ভিডিও বানাইনি এখনো। বানালে পরে এখানে দিয়ে দিবো। ]
[চলবে]
Tags:
Pingback: ফিফথ ইয়ারের শুরু থেকে মেডিসিন কিভাবে পড়বা ? – Faisalization
Pingback: ফিফথ ইয়ারের শুরু থেকে মেডিসিন কিভাবে পড়বো ? – Faisalization
Vaia “ইসিজি শিখবেন কীভাবে” ar 2nd part post koren..😐
Vaia 2nd part??