১১/৪/১৯

ভালো লাগেনা কিছু।

কালকে জেবা ম্যাম এর কাছে যাওয়ার কথা। আজকেও পড়া শেষ করিনাই।

এমন অবস্থার মধ্যে দিয়ে শেষ কবে গেছিলাম মনে পড়েনা।

মাঝে মাঝে ভাবি কি যদি এমন হইতো যে ঘুমায় গেলাম, আর এক ঘুম দিয়ে উঠে দেখলাম যে প্রফ পাশ, ইন্টার্নশিপ শেষ। খুব খুব ভালো হইতো বলে মনে হয়। পাশ যদি এবার করিও, এখানে ফরিদপুরে ইন্টার্নশিপ করবো কিভাবে জানিনা। কারোর সাথে দেখা করতে, কথা বলতে ইচ্ছা করেনা। মাঝেমধ্যে ভাবি ইন্টার্নশিপ এখানে না করে যাইগা অন্য কোথাও। কুমিল্লা বা ঢাকা। পরেই আবার ভাবি এখানে এই দূরদেশে ভালোবাসার মানুষটারে ফেলায় রেখে কেমনে যাবো! আর এতগুলান প্রিয় মানুষরে ছাড়া কেম্নে থাকবো?

আচ্ছা আমি চলে গেলে মিস করবে কে কে? খুব বেশি সংখ্যক মানুষ না মে বি।রেজাল্ট দেয়ার পর ক্লোজ সার্কেল এর বাইরে থেকে দুইজনের কল পাইছি। দুইটাই খুবই আন এক্সপেক্টেড। কিবরিয়া, আর মোহন।

একটা ফেল কতজনরে যে একা কইরা দিলো। কতজনরে কতজনের সাথে কথা বলায় দিলো, ভাব করায় দিলো। সৌমিত্র ব্রাদার ওইদিন ফোন দিয়া জিগাইলো কি অবস্থা ব্রাদার, চা টা খাইতে যাবা নাকি। শাকিল আহমেদ প্রায়ই রুমে এসে বইসা থাকে। ওর সাথে কথা বলার মতন টপিক পাইনা।সেও চুপ, আমিও চুপ, মাঝেমধ্যে তূণীর চৌধুরী পাব্জি খেলতে খেলতে চেচায়ে ওঠে- সামনে এনিমি, কিংবা স্নাইপারের সাপ্রেসর পাইলে দিয়েন আমারে, হঠাত করে শাকিল আহমেদরে দেখে আবার জিজ্ঞেস করে, কি খবর শাকিল আহমেদ মদ খাবা নাকি। 😅

রতন্দেব রে এমনেই পছন্দ করতাম আগে থেকেই। সাপ্লির পর ওরে পছন্দের মাত্রাটা বাড়তেছে। শালা প্রতিদিন দুপুরে ডিউটি শেষে রুমে আসে। দুইবেলা একসাথে খাই, জাস্ট লাইক বিফোর।

ওইযে তূণীর চৌধুরী আবার বিদেশীর সাথে পাব্জি খেলতেছে- হুইচ কান্ট্রি আর ইউ ফ্রম। সৌমিক থাকলে গ্র‍্যামাটিক্যালি ঠিকঠাক কইরা দিতো কথাগুলান।

একটা ছাব্বিশ বাজে। ১১ তারিখ, এপ্রিল মাস।সার্টিফিকেট অনুযায়ী আজকে আব্বার জন্মদিন। বিকালে নন্টুরে ফোন দিয়ে বললাম ভাইয়া তুমি কি জানো আজকে বাবার হেপি বাড্ডে। সে তানহাকে ফোন দিয়ে বলে, শাকিল ভাইয়া কয় বাবার বলে হেপি বাড্ডে। বলে তানহাকে ফোন ধরায় দিয়েই সে আবার টিভির রুমে, সম্ভবত মোটু পাতলু বা শিনচ্যান দেখতেছে। নন্টুর আসল নাম নির্ঝর। নামটা আমার রাখা।একদিন রাতে আব্বা ফোন দিয়ে বললো একটা নাম লাগবে, ছেলের নাম। সাথে আবদুল্লাহ থাকবে। ২০১২ সালের কথা। আমি তখন ঢাকায়।নটরডেম কলেজে পড়ি। আম্মা আর আমি সাবলেট থাকি বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনীতে। আমার একটা খাতা ছিল তখন। ওই খাতায় অনেককিছু লেখা থাকতো। নতুন আইডিয়া, পরীক্ষার পর কি করবো, পছন্দের কোটেশন, বাসায় নতুন বাচ্চা হলে নাম কি রাখবে ইত্যাদি ইত্যাদি। ওইখানে লেখা ছিল নামটা- নির্ঝর। আরেকবার শিউর হবার জন্যে বাংলা একাডেমি অভিধান থেকে অর্থটা দেখলাম।নির্ঝর- পাহাড় থেকে নেমে আসা পানির ধারা।বেশ ভালো লাগলো। আব্বাকে মেসেজ পাঠাইলাম। নির্ঝর। নির্ঝর আবদুল্লাহ।অমিত কুমার শুনে বললো নির্ঝর নামটা সুন্দর, তবে এইটার সাথে আবদুল্লাহ ত যায়না। নির্ঝরের আব্বা জাহাংগীর কাকা শুনে বললো এইটা ত হিন্দু নাম। উনি সৌদি আরব থাকেন। বিরাট ধার্মিক। উনি নির্ঝর আবদুল্লাহর নাম দিলেন ফাহিম আবদুল্লাহ ওলিদ।

বাজে বকতেছি। রতন দেব এর মতন। আর কথা কওয়া যাবেনা। এই প্রসংগে মনে পড়লো, মেডিসিন ওয়ার্ডের খাতায় Dysarthria, Dysphasia আর আরেকটা কি যেন এর পার্থক্য বুঝানোর জন্যে লিখসিলাম যে এইটা হইলে প্যাশেন্ট বাজে বকে। রতন দেব এর মতন। এই খাতা আবার অনেকে ফটোকপি করছে। রতন দেব একদিন রুমে আইসা বলতেছে শালারপুত তুই খাতায় এগুলা কি লেখসোস! 😅

একই রকম আরেকটা ঘটনা। ইউরিনারি ব্লাডার পালপেট করার প্রসিডিউর এ লিখসি লাভহান্টার রাজন স্টাইলে পালপেট করতে হবে। ২৫ এর কোন এক ছেলে ওয়ার্ডে আইটেম দিতে যেয়ে এটা বলছে, যে লাভহান্টার রাজন স্টাইলে পালপেট করতে হবে।

কিয়েক্টাঅবস্থা। 😅

On a different note, নিচের কয়েকটা লাইন, বোহেমিয়ান র‍্যাপসোডি গানটা থেকে নেয়া।

Is this the real life?
Is this just fantasy?
Caught in a landslide
No escape from reality
Open your eyes
Look up to the skies and see
I\’m just a poor boy, I need no sympathy
Because I\’m easy come, easy go
A little high, little low
Anyway the wind blows, doesn\’t really matter to me, to me.

Tags:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top