সেইদিন রাতের বেলা হঠাত করেই খারাপ লাগা শুরু করলো। জিসান ভাই বললেন- আমরা চইলা যাবো। তোগো খারাপ লাগবে না?
কি যে একটা অদ্ভূত শূণ্যতা চেপে ধরলো বইলা বুঝাইতে পারবোনা। আমার বড় ভাই ছিলেন না।বোনও না। বোনের জায়গাটা কেউ কক্ষনো নিতে পারে নাই।
আলাদা করে পরিচয়টা ঠিক কবে কিভাবে কোথায় হয়েছিল মনে নাই। যতদূর মনে পড়ে ১৬ সালে আমরা যখন থার্ড ইয়ারে তখন একবার কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল মেডিসিন ক্লাবের সাথে। তারপর থেকে বড় ভাই এর জায়গাটা দখল করে ফেলেছিলেন একজন।
রতন একবার বলছিল যে জীবনে ভালোভাবে থাকতে হইলে একটা বড়ভাই একটা ছোটভাই আর একটা ব্যাচমেট দরকার। ছোটভাই- ব্যাচমেট নিয়ে তর্ক করা যাবে হয়তো। কিন্তু বড়ভাইয়ের জায়গাটা সবসময়েই ছিল আপনার দখলে।
গত তিনটা বছর যেইভাবে পাশে পাইছি আপনাকে, আর কোনদিন কখনো হয়তো এইভাবে পাওয়া হবেনা। আমরা ঢাকায় আসতে আসতে আপনারা কোর্সে ঢুকে যাবেন হয়তো। আর নাহয় বিসিএস পোস্টিং নয়তো খ্যাপ।
যতদিনে দুইজনেরই ঢাকায় থাকার মত অবস্থা হবে ততদিনে আর রিক্সায় বইসা রাত ৩টায় শহর ঘুরা অথবা রাতদুপুরে উরাধুরা খাওয়াদাওয়া-ঘুরাঘুরি কিংবা এই জগতসংসারে কে কাকে কোথায় কিভাবে…. টাইপের কথাবার্তা বলার বয়েস থাকবেনা। যে অল্প কয়েকটা মানুষের কারণে ফরিদপুরের জীবনটা ভালো লাগতো তার একটা বড় অংশ জুড়ে আপনার নামটা আছে।
গত তিনটা বছর মাথার উপর ছায়া হয়ে ছিলেন ভাই। কোনদিন কোন ঝড় ঝাপটা লাগতে দেন নাই গায়ে। বড় ভাইয়েরা বোধহয় এমনই হয়।
যাইহোক।
বিদায়বেলাটা আরেকটু ভাল হইতে পারতো। আপনি ফরিদপুর ছাইড়া যাওয়ার আগেই আমি ঈদের ছুটিতে আপনারে ফরিদপুরে ফেলায়া বাসায় চইলা আসলাম, বিদায় আর কেমনে হইলো!
শেষদিনের চা খাওয়ার এই ক্যালানো ছবিটা থাকলো। কোন একসময় হয়তো নাতী-নাতনীকে বলতে পারবো এই যে তোমরা জায়েদ ডাক্তারের নাম শুনো, তার সাথে বইসা চা খাইসিলাম একবার।
ভালো থাকবেন ডা. জায়েদ আতিক।
Tags: