বাসর রাতে দরজার ছিটকিনি আটকায়ে আসতে হয়

আমি দেখতে খুব যে সুন্দরী সেটা না। মোটামোটি বলতে পারেন।কিন্তু এই ছেলের যে কেন আমাকে ভালো লেগে গেলো সেটা বুঝলাম না।একটু একটু করে বলি।
তার সাথে প্রথম কথা :

আচ্ছা আপনি ছবি তুলতে পারেন?

……………..

আপনি বই পড়তে ভালোবাসেন?

——

মুভি দেখেন?

——-

গান শুনেন?

………………
মোটামোটি শিউর যে এ যাত্রায় বেচে গেলাম।তাইরে নাইরে না করে বসে গেলাম নেক্সট মুভি দেখতে।
সেদিন রাতের ঘটনা:

মা বললেন ডাক্তার সাহেব নাকি আমাকে বিয়ে করতে চান। কালকেই নাকি আংটি পরাবেন।বাসায় আগুন ধরে গেল।মিষ্টি আনতে পাঠালেন অনিতকে।মা নীতুকে ফোন করে বললেন দলবল নিয়ে চলে আসার জন্যে।

পরদিন ওরা আসল।আংটি পড়িয়ে চলেও গেল।মানুষজনের মাঝে আমার কখনোই ভালো লাগেনা। হইচই সহ্যই করতে পারিনা।ওদেরকে ভালোই লাগলো আমার।ও, আব্বু, আম্মু, ওর চাচারা দুইজন, আর চাচাত ভাইবোন .পিচ্চি তানহাটা তো ভাবি ভাবি বলে আমার মাথাখারাপ করে দিয়েছে!যাওয়ার আগ দিয়ে এক ফাকে পিচ্চিটা একটা চিরকুটমত কাগজ আর একটা কিটক্যাট ধরায়ে দিয়ে গেল।
এমনভাবে লিখলো যেন আমি তার কত জনমের পরিচিত।গাধা।

আচ্ছা যাই হোক, ডাক্তার সাহেব জানতে চেয়েছেন পড়শু ফ্রী কিনা বিকেলে:
প্রথমত, তোমার নামটা জানা হয়নি। তাই কি বলে ডাকবো জানিনা।দ্বিতীয়ত, আমি এত তাড়াহুড়া করতে চাইনি। আমার বিসিএস জয়েনিং সামনের মাসেই। তাছাড়া তোমারও পরীক্ষা শেষ শুনলাম। সবাই খুব করে চাচ্ছিলো যেন এখনই হয়ে যায় বিয়েটা।আশা করি বুঝবে।আর হ্যা,পড়শু বিকেলে ফ্রী আছো?
ফ্রীই তো.

কিন্তু এই খবর ডাক্তারকে কিভাবে পৌছাবো! আমার কাছে উনার নাম্বার নাই। মার কাছ থেকে চেয়ে নিবো ?ধ্যাত! মায়ের কাছ থেকে হবু বরের নাম্বার নিব নাকি আমি!
দুদিন পর।

বারান্দায় কফির কাপ হাতে গান শুনছিলাম।এসএমএস।নিচে তাকাও। এখনি।

ডাক্তার সাহেব বলদের মত একটা হাসি দিয়ে তাকালেন।আমি দৌড়ে মাকে ডাকতে গেলাম.

আসার পথে ফুচকা, আইসক্রিম আর টং এর চা।ভাবলাম হাতটাত ধরবে। একটু খাতির করার চেষ্টা করবে। কিসের কি!কয়েকবার অবশ্য আড়চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখেছি।থাকুক!দেখুক!বিয়ের পর এমন ক্যাবলার মত তাকায়ে থাকলে থাপড়ায়ে দাত ফালায় দিবো না !

কিভাবে কিভাবে যেন বিয়েটা শেষ হল।অবশেষে।দুজন একাকী.

ওদের বাসার সবাই মিলে আমাকে ফুল পাখি বেলুন দিয়ে সাজানো একটা রুমে বসায় দিয়ে গেল। কিছুক্ষন পর ঠেলেঠুলে ওকে রুমে ঢুকায় দিল।খুব হাসি পাচ্ছে।অথচ হাসতে পারছিনা। হাসি চেপে ধরে বসে আছি।

কিছু বলবা?

দরজাটা।

দরজায় কি?

ছিটকিনি।

কি হইছে ছিটকিনির?

বাসর রাতে দরজার ছিটকিনি আটকায়ে আসতে হয়।

********************************

আইফোন নামের এই বস্তুটা কেনার পর থেকে বাংলা লিখতে জান বাইর হইয়া যায়. 

আজকা আতকা এক ব্রো মনে করায় দিল বহুতদিন লেখিনা.

এপল তোমরা কবে একটা ভাল বাংলা কিবোর্ড দিবা ?

Tags:

0 thoughts on “বাসর রাতে দরজার ছিটকিনি আটকায়ে আসতে হয়”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top