আগামীকাল ওয়ার্ড করেই পূজোর ছুটি।
১৯ তারিখ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত।
মেডিসিনে প্লেসমেন্ট আমাদের।
এখন চলছে এলিমেন্টারি সিস্টেম।
১৫ থেকে ২০ হওয়ার কথা এলিমেন্টারি।
হল কেবল একদিন।একবেলা।
২১ থেকে ২৮ নিউরো।র্যাধেশ্যাম স্যার। বলা হয়ে থাকে নদীর এপাড়ে নিউরো মানেই র্যাধেশ্যাম স্যার। সবাই বলেন যে নিউরো নাকি সবচাইতে মজা। অথচ নিউরোর প্রতি আমার ব্যাপক এলার্জি। নিউরো এনাটমি পারিনা বলে। ভেবেছিলাম এনাটমি একটু আকটু পড়ে নিউরো ওয়ার্ডে যেয়ে দেখবো ভালো লাগে কিনা। কিন্তু নিউরোর ক্লাস সবগুলোই মিস যাচ্ছে।
🙁
হোস্টেলে এলাম এক সপ্তা হল।
বাসায় নতুন অতিথি এসেছে। সেই সুবাদে আম্মার বাসায় গমন।
এবারেরটা ভাই, চাচাত।
আমার জন্ম ৯৪ এ।
আর আমার নিকটতম কাজিন এখন পড়ে কেজিতে। চাচাত-খালাত মোটামোটি সবাই দেখি আমার কোলে উঠার সৌভাগ্য নিয়ে জন্মেছে!
বরং স্বপ্ন শুনাই।
আমার একটা টিনশেড বাসায় থাকার খুব শখ।
বাসা ইটের, কিন্তু উপরে ছাদ থাকবে না।
থাকবে টিন।
বৃষ্টির ঝনঝন শব্দ হবে।
একটা বারান্দা থাকতে পারে।
বাসায় একটা ছোট্ট লাইব্রেরী থাকবে।
তাতে বই থাকবে।
কবিতা, উপন্যাস, অনুবাদ, রম্য, কমিকস- সব থাকবে।
একটা কুকুর পুষবো।ওটার গলায় বেল্ট লাগানো থাকবে।
মাঝরাতে যখন ঘুরতে বেরুবো তখন ওকে সংগী বানাবো।
মাঝেমধ্যেই আমার মাঝরাতে ঘুরবার শখ হয়।
এই যেমন এখন।রাত আড়াইটা নাগাদ বাজে।
সকালে এলিমেন্টারি আইটেম।
ইউসুফ স্যার আইটেম নিবেন।
অথচ পড়ার মুড নাই।
রিক্সা করে ঘুরতে ইচ্ছে করছে খুব।
কিন্তু আপাতত সেই বিলাসিতাটুকু করার সাহস নাই।
পকেটে দুইশ বাইশ টাকা।
কালকে বিকাশে টাকা পাওয়ার আগ পর্যন্ত ওটাই সম্বল।
আম্মা চলে যাওয়ার আগে তিন হাজার দিয়ে গিয়েছিল। আর আমার আগের জমানো একহাজার। মোটমাট চার হাজার। এর মধ্যে এক হাজার গেল বাসার কারেন্ট বিলে।
যা বলছিলাম।
মেডিসিন ওয়ার্ড চলছে এখন।সার্জারি চলছিল যখন তখন ভাবতাম সার্জারিতে ক্যারিয়ার করবো।
মেডিসিনে এসে ধারনা বদলালো।
সার্জারি না, মেডিসিনই আমার ঠিকানা।
কিন্তু কোন মেডিসিন?
লোকে বলে জেনারেল মেডিসিনের নাকি ভাত নাই।
সুপার স্পেশালিটি লাগবেই।
কিন্তু কোনটা?
কার্ডিও?
রেস্পিরেটরি?
গ্যাস্ট্রো?
নাকি নিউরো?
গ্যাস্ট্রোকে বাদ দিয়ে দিচ্ছি।
গ্যাস্ট্রো ওয়ার্ড করে ভাল্লাগেনাই।
এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে এগিয়ে আছে রেস্পিরেটরি।
কার্ডিও ভালো ছিল।কিন্তু রেস্পিতে এসে এটা বেশি ভালো লাগলো।
কার্ডিও যদি পড়ি, তাহলে ক্রেডিট শাহিন স্যারের।
আর রেস্পি পড়লে বিনয় স্যার আর কার্জন স্যারের।
আজকে দেখলাম কার্জন স্যার নটর ডেমের।
১৯৯৯ সালের ব্যাচ।
এত্তো ভালো লাগলো দেখে!
দেশের সব বস বস লোকেরা আমার কলেজের!
এই মানুষটাকে বড্ড বেশি ভালো লেগে গেল।
এক সপ্তাহ হয়ে গেল।
নাহ, আম্মাকে মিস করছি না একদমই।
মিস করার বাতিক আমার কখনোই ছিল না।