ক্যারি অন মানি না, মানবো না।

[ মেডিকেল স্টুডেন্ট-টিচার-ডাক্তার ভাইয়া-আপুদের প্রতি অনুরোধ, একবার পুরোটা লেখা পড়ুন, দোহাই লাগে। ]

প্রথম পেশাগত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হল।
একসাথেই পড়তাম আমরা। এক রুমেই থাকতাম। আমার পড়তে ভালো না লাগলে জোর করে পড়তে বসাতো ও আমাকে। কত্তো বকুনি শুনেছি – \”এরকম করলে তো দশবার সাপ্লি দিলেও তোর ফার্স্ট প্রফ পাশ হবে না।\”
যে মানুষটা ঠেলেঠুলে পড়াতো আমাকে সে নাকি থার্ড ইয়ারে আর আমার সাথে ক্লাস করতে পারবে না।
হয়তো প্রিপারেশন খারাপ ছিল, হয়তো কোন কারনে পরীক্ষাটা খারাপ হয়েছে। কিন্তু তাই বলে এরকমটা কেন হল?
সবাই তো ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই এসেছিলাম আমরা। প্রথম যেদিন এপ্রোন পড়েছিলাম, সেদিন তার সর্বাংগেও আমার মতই শিহরন বয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু আজ যখন গলায় স্টেথো ঝুলিয়ে আমি দ্বিতীয়বার ডাক্তার হতে ওয়ার্ডে যাচ্ছি তবে এই সুযোগটা সে কেন ছমাস-একবছর পরে পাবে?


ফেল করেছে। সাপ্লি দিবে। আবার ফেল করলে আবার সাপ্লি দিবে।
কিন্তু তাই বলে এক বছর বসে থাকা?
আমি রোগীর হিস্ট্রি নেয়া শিখবো আর আমার এই বন্ধুটা, আমার রুমমেটটা যার সাথে বছরজুড়ে হাসিকান্নার গল্প লিখলাম – সে একা একা রুমে বসে থাকবে?
এ কেমন বিধান?

এরকম অবস্থায় যারা পাশ করেছে তাদের কী করণীয় আর যারা ফেল করেছে তাদেরই বা কি করনীয়, সেটা আমাদের কারোরই জানা নেই।
বাংলাদেশের সরকারী-বেসরকারী মেডিকেল কলেজে পড়ুয়া ২০১৩-১৪ সেশনের আমার সকল ব্যাচমেট এবং সকল সিনিয়র ভাইয়া-আপুকে অনুরোধ জানাচ্ছি এগিয়ে আসার জন্যে।
যারা জানেন না তাদেরকে বলছি, এবছর থেকে ফার্স্ট প্রফে ক্যারি অন সিস্টেম বাতিল করা হয়েছে।যার মানে হল কেউ যদি ফার্স্ট প্রফে কোন বিষয়ে ফেল করে তাহলে সে সাপ্লি দিয়ে পাশ করার আগে অন্যন্যদের সাথে থার্ড ইয়ারের ক্লাস ওয়ার্ড করতে পারবে না।

প্রিয় ব্যাচমেট [ ভাগ্য যাদের সহায় ছিল, যারা পাশ করেছি ], শ্রদ্ধেয় সিনিয়র ভাইয়া-আপু, শ্রদ্ধেয় স্যার-ম্যাম,  আপনারা যারা মনে করেন যে ফার্স্ট প্রফে ফেল করা স্টুডেন্টদেরও থার্ড ইয়ারের ক্লাস শুরুর অধিকার থাকা উচিত, যারা ফার্স্ট প্রফে ক্যারি অন বাতিল করার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে – তারা অনুগ্রহ করে এই লেখাটি আপনার ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট দিন- শেয়ার করুন, আপনার পরিচিত মেডিকেলের সবাইকে ট্যাগ করুন, স্যার-ম্যামদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলুন। আপনাদের একটু চেষ্টা আমাদের বন্ধুদের মূল্যবান জীবনের ছয়টা মাস কিংবা একটা বছর বাঁচিয়ে দিতে পারে।
আমরা প্রত্যেকে যদি অন্তত নিজের পরিচিত সব ব্যাচমেট আর বড়ভাইয়া-আপু আর স্যার-ম্যামদের ট্যাগ করে দেই তাহলে অচিরেই হয়ত আমরা সংশ্লিষ্ট কারো না কারো শুভদৃষ্টি আকর্ষন করতে সক্ষম হব।

Tags: , , , , ,

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top