মানুষজনের ওয়ালে যেয়ে ঘুরাঘুরি করা আমার পুরনো স্বভাব।
আজকালকার অভ্র পরবর্তী যুগের প্রগতিশীল সমাজ যে কাজ প্রফ সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হইয়া পালন করিয়া থাকে, উহা স্ট্যাটাসদাতা বহু আগে থেকেই করিয়া আসিতেছে। কিন্তু তখনো উহা ট্রেন্ড হইয়ে উঠে নাই। হ্যাপিনেস ইজ, সেলফি, হ্যাশট্যাগ তো বহু পরের ব্যাপার স্যাপার।
এডমিশনের পরের কথাবার্তা বলছি। প্রায় বছরখানেক আগের কথা।আস্ক এফ এম নামের একটা জিনিসের উদ্ভব হয়েছিল তখন।
মানুষেরা একজন আরেকজনকে এটাসেটা প্রশ্ন করত। মজার ব্যাপার হল প্রশ্নকর্তার পরিচয় গোপন থাকতো।
খুব মজার মজার প্রশ্ন আসতো।
খাচ্ছেন?
গাচ্ছেন?
পড়ছেন?
আচ্ছা বলেন তো আমি কে?
আমার কোলে মাথা রেখে ঘুমাবা?
আপনি এত ভাব নেন কেন?
আপনি এত আতেল কেন?
:*
কোনকিছুই বাদ যেত না।
খুব মজার মজার উত্তরও আসতো।
আমার কোলে মাথা রেখা ঘুমাবা?
-সিটিএন
আপনি এত আতেল কেন?
– চুলকায় এজন্যে।
গতকাল রাতের কথা। মানুষজনের ওয়ালে ঘুরাঘুরি করতে করতে একসময় আস্ক এফ এমের লিংক পেয়ে প্রায় বছরখানেক পরে নিজের আস্ক এফ এম একাউন্টে ঢু মারলাম। পুরনো একটা প্রশ্নে চোখ আটকে গেল।
বাংলা সিনেমার নায়ক বানানো হলে নায়িকা হিসেবে কাকে চাইবেন?
উত্তরে লিখছিলাম:
\”প্রথম ছবিতে র্যান্ডম যে কেউ হইলেই চলবে।
এবার একটা কাহিনি বলি-
এক জায়গায় একজনের সাথে চোখাচোখি হইসিল।সে আমার দিকে আসতে ছিল।কিছুদুর আইসা সে থামল।আমি চেয়ার ছাইড়া উইঠা তার দিকে হাটা ধরলাম। যাইতে যাইতে ঘন্টা পইরা গেল।শী হ্যাড লেফট দ্য প্লেস হয়েন আই ওয়াজ দেয়ার।
দ্বিতীয় ছবিতে তাকে চাই।\”
আইবিএর ভর্তি পরীক্ষার দিনের ঘটনা ছিল এটা। ঘড়ি জমা দেয়ার জন্যে আমি উঠে ইনভিজিলেটর স্যারের কাছে যাচ্ছিলাম । আর মেয়েটা সিট খুজে পাচ্ছিলোনা বলে সারি ধরে পেছনের দিকে যাচ্ছিলো।
পরীক্ষা যাচ্ছেতাই রকমের হয়েছিল।চান্স পাওয়ার কোন সম্ভাবনাই ছিল না।এরকম বিধ্বংসী পরীক্ষা শেষে তাহাকে খোজা হয় নাই আর।
একসময় কত লুচু ছিলাম!
:p
মন ভালো থাকার জন্যে উপলক্ষ্যের অভাব ছিল না গতকাল।
সাধের ব্লগে অনেকদিন পর ৫০+ ভিউ। সাথে দুই একটা মন কেমন করা সার্চ টার্ম।
পাঠ্যবইয়ে নেই এর সবুজে ভরা ইনফো।
কিন্তু টায়ার্ড ছিলাম খুবই। আগের রাতে ঘুমাই নি।ভেবেছি সকালবেলা ওয়ার্ড করে এসে ঘুমাবো।
এ ব্যাচের ডেন্টিস্ট্রি ওয়ার্ড। স্যার বলে দিয়েছেন শনিবার ওয়ার্ডে আসতে।
কিন্তু বাসায় থেকে করবোটা কি।
আতেল নামের সার্থকতা রক্ষার জন্যে গেলাম ওয়ার্ডে। বি ব্যাচের সাথে এনেস্থেশিয়া ওয়ার্ড।
গতকাল বলেছিলাম আজকে ওয়ার্ডে যেয়েই একগাদা ছবি তুলবো। কিন্তু ওয়ার্ডের ধান্দায় ভুলে গেলাম ছবি তুলতে।
যাই হোক।
স্যার এটাসেটা দেখালেন। স্যারের কথা শুনলাম, মাঝেমধ্যে লিখলামও।
এরপর ইমার্জেন্সি ওটিতে বসে বসে অপারেশন দেখা আর সবশেষে পার্সেন্টেজ দিয়ে বিদায়। এ ব্যাচের হয়ে আমি পার্সেন্টেজ দেই কেমনে!
সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আলীম-মেহেদি-কাউসার-জয়ন্তের সাথে অটোতে করে নদী গবেষনা কেন্দ্রে ঝটিকা সফর। অটোতে উঠে মনে পড়লো সেলফি তোলার কথা। তুললাম সেলফি। ড্রাইভারের পাশে বসায় জয়ন্ত সেলফি থেকে বঞ্চিত!
পুনশ্চ:
আব্দুল আলীম, যখন বলসিলাম এক্সট্রা ওয়ার্ড করুম, তখন তো খুব খোটা দিসিলা।
এবার কিছু কও!
পুনশ্চ:
গতরাতে লিখেছিলুম।
পোস্ট না দিয়েই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।
লিখন ডেট: জুলাই ২, ২০১৫
অনুলিখন এবং পোস্টিং: জুলাই ৩,২০১৫