বাসায় আসলাম সপ্তাখানেক হল।
চলে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসছে।
আসার ইচ্ছাই ছিল না এবার।
একদমই আসতে চাই নি।
আব্বুর জন্যে আসা।
অথচ এখন যেতে ইচ্ছা করছে না।
পড়শু চলে যাব ভাবতেই ভেতরটা জ্বলে উঠছে।
গতকাল বিকেলবেলা বের হয়েছিলাম।
হাঁটতে।
একা একা হাঁটতে ভালো লাগে না কখনোই।ফোন দিলাম কয়েকজনকে।সবাই ব্যস্ত।
হেঁটে যাচ্ছিলাম।সেই পুরনো রাস্তাটা দিয়ে।এদিকে দিয়ে স্কুলে যেতাম আম্মুর হাত ধরে।
সুমন ফটোকপির সামনে আসতেই বৃষ্টি নামলো।
বৃষ্টি ব্যাপারটা উপভোগ করতে পারিনি কখনো। কেউ দেখিয়ে দেয়নি বলে।
আব্বা -আম্মা বা পরিবারের কাউকে কক্ষনো দেখিনি প্রকৃতির কোন ব্যাপারে উৎসাহী হতে।তাই স্বাভাবিকভাবেই আমার ভাবনায় কখনো প্রকৃতি আসেনি।এই বুড়ো বয়সে এসে হাওয়াবদল হল।কেন যেন হঠাৎই প্রাকৃতিক ব্যাপারগুলো চোখে পড়তে শুরু করলো।
এমনিতে কখনো ভেজা হয়না।আম্মার জন্যে।আম্মা ভিজতে দেয় না।আমি আবার খুব মাতৃভক্ত তো! ভিজি না।
আজকে ভিজলাম।
একা একা কিচ্ছু ভাল্লাগেনা আমার।না খেতে, না ঘুরতে।ভিজতেও ভাল্লাগলো না তাই।
গোলাপি সাদা শাড়ির উনি পাশে থাকলে মন্দ হত না বোধ হয়। হাত ধরে হাঁটতাম আমরা।কাকভেজা হয়ে হয়ত নোঙর এর সামনের শেডটার নিচে এসে দাড়াতাম।
এরপর হাঁটতে হাঁটতে হয়ত চলে যেতাম ধর্মসাগরপাড়।পায়ে হাঁটা পথ ধরে হাঁটতাম।
সেখান থেকে জামতলা। জামতলায় বসতাম দুজনে। বাদাম কিনতাম হয়ত, ১০ টাকার।তুমি পা ঝুলিয়ে বসতে।
বাদাম ছিলে আমার হাতে দিতে, আমি না খেয়ে হাতের মুঠোয় বাদাম জমাতাম।তারপর তোমার বাদাম ছিলার পর্ব শেষ হলে আমার জমানো সবগুলো তোমার হাতে ধরায়ে দিতাম।তুমি কুট কুট করে বাদাম খেতে, আমি তাকিয়ে দেখতাম।
মাঝে মাঝে ভেতরটা না কেমন হাহাকার করে ওঠে।ভাইভা বোর্ডে ঢোকার আগের সময়টাতে। এরপরের বারই আমার ডাক আসবে- এমন সময়টা খুব একাকীত্বে কাটে।এই সময়টাতে কেন যেন কাউকে পাইনা পাশে।
হয়ত আমার প্রিপারেশন ভালো।রেজাল্টও ভালো হবে হয়তো।
কিন্তু, তারপরেও।এই সময়টাতে অনেক বেশি নার্ভাস থাকি আমি।ভাইভা বোর্ডে ঢোকার পরে আমার একদমই নার্ভাস লাগে না।কিন্তু ওই আগের সময়টাতেই যা হওয়ার হয়ে যায়।
ইশশ, এই সময়টাতে যদি পাশে এসে কেউ বসতো!
ধুরো, আমিতো আতেল।
আতেলদের অভিমান করতে নেই।
আমি বরং গান শুনি:
\”মিলন রাতের প্রদীপ হয়ে আমি
জ্বলবো বাসরে।
ও পারে থাকবো আমি
তুমি রইবে এ পারে
শুধু আমার দুচোখ ভরে
দেখবো তোমারে।\”
:\’-)
এই!
এই গানটা তোমার জন্যে।
মনযোগ দিয়ে শুনবা কিন্তু!
http://m.youtube.com/?#/watch?v=nYE6aDrha5Q
Tags: