স্বাগতম হে নবীন !

মেডিকেল কলেজে পড়ালেখা একটু ভিন্ন ধরনের, ভার্সিটি কিংবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে একেবারেই আলাদা। স্কুল কলেজে যেমন সবকিছু একেবারে বুঝিয়ে সুঝিয়ে দেয়া হত, [মানে স্পুনফিডিং আর কি! ],
এখানে তেমনটা হয় না।তাই ক্লাস শুরুর আগে কিছু ব্যাপার জেনে গেলে খুব কাজে আসবে, মানসিকভাবে তুমি অনেক এগিয়ে থাকবে।

ইন্টারমিডিয়েটে আমরা যেমন ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা দিতাম, তেমনি মেডিকেলে আমরা দেই \’Professional\’ পরীক্ষা বা প্রফ।
আমাদের ভাইয়ারা তিনটা প্রফ দিতেন।নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী আমরা চারটা প্রফ দিব।
মেডিকেল কলেজের পড়ালেখা হয় প্রফকেন্দ্রিক।এখানে প্রথম দুই বছরের পড়ালেখা মিলিয়ে 1st Prof.
আগামী ২০১৬ সালের মে মাসে তোমরা ফার্স্ট প্রফ দিবে।তাই এখন শুধুই ফার্স্ট প্রফ নিয়ে কথা হবে।

ফার্স্ট প্রফের জন্যে আমরা তিনটা বিষয় পড়বো।
-Anatomy
-Physiology
-Biochemistry

এনাটমিকে আবার কয়েকটা ভাগে ভাগ করা যায়-
-Gross Anatomy
-Histology & General Anatomy
-Embryology

Physiology আর Biochemistry র কোন আলাদা subdivision নেই।

পড়ানোর সুবিধার্থে প্রত্যেকটা বিষয়কে কয়েকটা টপিকে ভাগ করে ফেলা হয়।
যেমন,
এনাটমিতে
Thorax- [বক্ষপিঞ্জর]
Abodomen-
Sulerior Extremity -হাত
Inferior Extremity -পা
Head Neck
Brain & Eyeball

এই টপিকগুলোকে বলে \’Card\’.
প্রত্যেকটা বিষয়কে ৬ টা কার্ডে ভাগ করা হয়েছে।ক্লাস শুরু হলেই নাম জানবে,এখন এগুলো বলে ভয় দেখাচ্ছি না!

একেকটা কার্ড পড়ানো শেষ হলে একটা পরীক্ষা নেয়া হয়,এর নাম \’Card Final\’ পরীক্ষা।
দুইটা কার্ড পড়ানো শেষ হলে, এই দুইটা কার্ডের সবকিছু মিলিয়ে আরেকটা পরীক্ষা নেয়া হিবে \’Term Final\’ পরীক্ষা।
বুঝতেই পারছো, ফার্স্ট প্রফের আগে প্রত্যেকটা সাবজেক্টের মোটমাট তিনটা টার্ম আর ৬টা করে কার্ড ফাইনাল পরীক্ষা দিতে হবে।

এইচএসসির কথা মনে আছে?
\’ইলেকট্রিসিটি\’?
ইলেকট্রিসিটির আন্ডারে বেশ কয়েকটা চ্যাপ্টার ছিলো না?
-স্থির তড়িত
-চল তড়িত
-তড়িত প্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়া
-তড়িত প্রবাহের তাপীয় ক্রিয়া

মনে পড়ে?

এখানেও অনেকটা তাই।
ইলেকট্রিসিটিকে ধরে নাও একটা কার্ড।একটা কার্ডকে আবার কয়েকটা ছোট ছোট চ্যাপ্টারে ভাগ করে।এই চ্যাপ্টারগুলোকে বলে \’আইটেম\’।
একেকটা আইটেম এর পড়া শেষ হলে স্যারেরা ভাইভা নিবেন, সোজা বাংলায় বলি, ডেকে নিয়ে পড়া ধরবেন।এই ভাইভা গুলোকে বলে \’আইটেম\’। আইটেম হল ১০ নাম্বারের ভাইভা পরীক্ষা।এর মধ্যে পাশ ৬ এ।
আইটেম এ ৬ এর বেশি পাওয়াকে অর্থাৎ পাশ করাকে বলে \’আইটেম ক্লিয়ার\’
আর ফেল করাকে বলে \’আইটেম পেন্ডিং\’।

অর্থাৎ পরীক্ষার ক্রম হচ্ছে
আইটেম<কার্ড ফাইনাল<টার্ম ফাইনাল<প্রফ

একটা কার্ডে যতগুলো আইটেম আছে, কার্ড ফাইনাল পরীক্ষার আগে সেগুলোকে ক্লিয়ার করে ফেলতে হয়, নাহলে কার্ড ফাইনালে বসতে দেয়া হয় না।

কার্ডে কেউ ফেল করলে তাকে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা দিতে দেয়া হয় না।টার্ম দিতে হলে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দিয়ে আগে কার্ড ক্লিয়ার করে নিতে হবে।

আবার কোন টার্ম ফাইনালে ফেল থাকলে প্রফ পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয় না।
কোন টার্মে ফেল থাকলে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দিয়ে টার্ম ক্লিয়ার করে নিতে হয়।

একটা প্রশ্ন হয়ত অনেকের মাথায় ঘুরঘুর করছে। সাপ্লিমেন্টারিতে ফেল করলে কি হবে?
সাপ্লিমেন্টারিতে কেউ ফেল করলে তাকে 'রি-সাপ্লি' দিতে হবে।

সোজা কথায় বলি, কোন পরীক্ষাকে Skip করার উপায় নেই।

Exam Pattern:
আইটেম হল ভাইভা পরীক্ষা।
স্যার তোমাকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবেন, তুমি উত্তর দিবে।

কার্ড ফাইনাল এবং টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার স্কীম:
-Written
-Viva
-Practical

এখানকার Written, Viva আর Practical এর মধ্যেও বৈচিত্র আছে।এগুলো নিয়ে এখন আর কোন কথা নয়।ধীরে ধীরে সব জানতে পারবে!

আরেকটা কথা, এখানে উপস্থিতির ব্যাপারস্যাপার খুব কড়া।
এটেন্ডেন্স কম থাকলে কার্ড/টার্ম/ প্রফে বসতে দেয়া হয় না।

Welcome to the World of Sacrifice!

Tags:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top